ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কর্মকর্তাদের বেতন কমানোর উদ্যোগের মধ্যেই দেড় মাসে ডিএসইর ৮ পর্ষদ সভা

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুলাই ২০২০
  • 86

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস মহামারিতে ব্যয় কমানোর জন্য কর্মকর্তাদের বেতন কাটার উদ্যোগ নিয়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষ। তবে গত দেড় মাসে ৭টি সভা করে ব্যয় বাড়িয়েছে পরিচালনা পর্ষদ নিজেই। এছাড়া আগামিকাল (১৬ জুলাই) আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হবে।

করোনাভাইরাস মহামারিতে শেয়ারবাজারে লেনদেনে মন্দাবস্থা। এরমধ্যে আবার ৬৬দিন লেনদেন বন্ধ ছিল। যা ডিএসইর আয়ে বড় প্রভাব ফেলেছে। এই পরিস্থিতি উত্তোরনে কর্মকর্তাদের বেতন কমানোর জন্য কমিটি করেছে ডিএসই। তবে গত ৩১ মে লেনদেন চালু হওয়ার পরে ৭টি পর্ষদ সভা করেছে পরিচালকেরা। যেখানে শুধুমাত্র ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক) বিক্রির জন্য ফি নির্ধারনের বিষয়টি উল্লেখ করার মতো এজেন্ডা ছিল। এই বিষয়ে ফি নির্ধারন চূড়ান্ত করতে গিয়ে আবার ২দিন (২ জুলাই ও ৮ জুলাই) পর্ষদ সভা লেগেছে। যে কারনে ৮ জুলাইয়ের অন্যান্য আলোচ্যসূচি অসমাপ্ত থেকে যায়। যা নিয়ে ১২ জুলাই আরেক দফায় পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর অতিরিক্ত জনবল ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতনাদি কমানো নিয়ে ১৬ জুলাই পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

ডিএসইর পর্ষদ সভায় প্রত্যেক পরিচালককে ১০ হাজার টাকা ফি দেওয়া হয়। এতে করে প্রত্যেক সভায় ডিএসইর ব্যয় হয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এরমধ্যে আবার করোনায় স্বশরীরে উপস্থিত হতে না পারায় পরিচালকদেরকে কম্পিউটার ও প্রিন্টার কিনে দিয়ে সেই ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। অথচ অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বছরে ৯টি সভা হয়।

এদিকে স্বশরীরে উপস্থিত হতে না হওয়ায় সভা করা সহজ হয়ে গেছে ডিএসইর পরিচালকদের। তারা এখন বাসায় থেকেই অনলাইনে সভায় অংশগ্রহণ করে। তাই চাইলেই যেকোন দিন সভা আয়োজন করা সম্ভব।

টেকনিক্যাল ইস্যু ছাড়াই ডিএসইর পর্ষদের প্রতিসপ্তাহে বোর্ড মিটিং নিয়ে অনেক সদস্যের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। একাধিক সদস্য বিজনেস আওয়ারকে বলেন, এতো মিটিং করেও ডিএসইর কোন উন্নতি হচ্ছে না। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের ৬ বছর পরেও গতানুগতিক মিটিং হয়। তাহলে এতো মিটিং করে লাভটা কি। এতে শুধু মিটিং ফিবাবদ ব্যয় বাড়ছে।

জানা গেছে, ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের একটি অংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ৭টি স্তরে ভাগ করে ৬টি স্তর থেকে বেতন কাটার পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক সালমা নাসরিনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে স্বতন্ত্র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান, মুনতাকিম আশরাফ, অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুদ এবং ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী ছানাউল হক।

আরও পড়ুন……

স্টক এক্সচেঞ্জের এফডিআরের সুদের উপর অফিসারদের জন্য শ্রমিক ফান্ড গঠন
ডিএসইতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ৭০-৮০ জনবল
স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালকদের এতো মিটিং, কিন্তু ফলাফল….
এখনো এফডিআর নির্ভর করে চলে স্টক এক্সচেঞ্জ
ডিএসইর এক ব্রোকারের থেকেও সিএসইর লেনদেন কম
শীর্ষ ৪ কর্মকর্তার পেছনে ডিএসইর মাসে ব্যয় ৩৩ লাখ টাকা, কিন্তু ফলাফল…

ডিএসইর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যারা ৫০ হাজার টাকার নিচে বেতন পান তাদের বেতন কাটা হবে না। তবে যারা ৫০ হাজার টাকার উপরে পান তাদের বেতনের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে ৫, ১০, ১৫, ২০, ২৫ ও ৩০ শতাংশ হারে কাটার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে যাদের বেতন ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে তাদের ৫ শতাংশ কাটার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এছাড়া দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বেতনের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ, দুই থেকে আড়াই লাখের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, আড়াই থেকে সাড়ে তিন লাখের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার লাখের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ এবং সাড়ে চার লাখ টাকার উপরে হলে ৩০ শতাংশ বেতন কাটার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১৫ জুলাই, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

কর্মকর্তাদের বেতন কমানোর উদ্যোগের মধ্যেই দেড় মাসে ডিএসইর ৮ পর্ষদ সভা

পোস্ট হয়েছে : ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুলাই ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস মহামারিতে ব্যয় কমানোর জন্য কর্মকর্তাদের বেতন কাটার উদ্যোগ নিয়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষ। তবে গত দেড় মাসে ৭টি সভা করে ব্যয় বাড়িয়েছে পরিচালনা পর্ষদ নিজেই। এছাড়া আগামিকাল (১৬ জুলাই) আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হবে।

করোনাভাইরাস মহামারিতে শেয়ারবাজারে লেনদেনে মন্দাবস্থা। এরমধ্যে আবার ৬৬দিন লেনদেন বন্ধ ছিল। যা ডিএসইর আয়ে বড় প্রভাব ফেলেছে। এই পরিস্থিতি উত্তোরনে কর্মকর্তাদের বেতন কমানোর জন্য কমিটি করেছে ডিএসই। তবে গত ৩১ মে লেনদেন চালু হওয়ার পরে ৭টি পর্ষদ সভা করেছে পরিচালকেরা। যেখানে শুধুমাত্র ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক) বিক্রির জন্য ফি নির্ধারনের বিষয়টি উল্লেখ করার মতো এজেন্ডা ছিল। এই বিষয়ে ফি নির্ধারন চূড়ান্ত করতে গিয়ে আবার ২দিন (২ জুলাই ও ৮ জুলাই) পর্ষদ সভা লেগেছে। যে কারনে ৮ জুলাইয়ের অন্যান্য আলোচ্যসূচি অসমাপ্ত থেকে যায়। যা নিয়ে ১২ জুলাই আরেক দফায় পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর অতিরিক্ত জনবল ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতনাদি কমানো নিয়ে ১৬ জুলাই পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

ডিএসইর পর্ষদ সভায় প্রত্যেক পরিচালককে ১০ হাজার টাকা ফি দেওয়া হয়। এতে করে প্রত্যেক সভায় ডিএসইর ব্যয় হয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এরমধ্যে আবার করোনায় স্বশরীরে উপস্থিত হতে না পারায় পরিচালকদেরকে কম্পিউটার ও প্রিন্টার কিনে দিয়ে সেই ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। অথচ অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বছরে ৯টি সভা হয়।

এদিকে স্বশরীরে উপস্থিত হতে না হওয়ায় সভা করা সহজ হয়ে গেছে ডিএসইর পরিচালকদের। তারা এখন বাসায় থেকেই অনলাইনে সভায় অংশগ্রহণ করে। তাই চাইলেই যেকোন দিন সভা আয়োজন করা সম্ভব।

টেকনিক্যাল ইস্যু ছাড়াই ডিএসইর পর্ষদের প্রতিসপ্তাহে বোর্ড মিটিং নিয়ে অনেক সদস্যের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। একাধিক সদস্য বিজনেস আওয়ারকে বলেন, এতো মিটিং করেও ডিএসইর কোন উন্নতি হচ্ছে না। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের ৬ বছর পরেও গতানুগতিক মিটিং হয়। তাহলে এতো মিটিং করে লাভটা কি। এতে শুধু মিটিং ফিবাবদ ব্যয় বাড়ছে।

জানা গেছে, ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের একটি অংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ৭টি স্তরে ভাগ করে ৬টি স্তর থেকে বেতন কাটার পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক সালমা নাসরিনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে স্বতন্ত্র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান, মুনতাকিম আশরাফ, অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুদ এবং ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী ছানাউল হক।

আরও পড়ুন……

স্টক এক্সচেঞ্জের এফডিআরের সুদের উপর অফিসারদের জন্য শ্রমিক ফান্ড গঠন
ডিএসইতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ৭০-৮০ জনবল
স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালকদের এতো মিটিং, কিন্তু ফলাফল….
এখনো এফডিআর নির্ভর করে চলে স্টক এক্সচেঞ্জ
ডিএসইর এক ব্রোকারের থেকেও সিএসইর লেনদেন কম
শীর্ষ ৪ কর্মকর্তার পেছনে ডিএসইর মাসে ব্যয় ৩৩ লাখ টাকা, কিন্তু ফলাফল…

ডিএসইর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যারা ৫০ হাজার টাকার নিচে বেতন পান তাদের বেতন কাটা হবে না। তবে যারা ৫০ হাজার টাকার উপরে পান তাদের বেতনের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে ৫, ১০, ১৫, ২০, ২৫ ও ৩০ শতাংশ হারে কাটার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে যাদের বেতন ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে তাদের ৫ শতাংশ কাটার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এছাড়া দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বেতনের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ, দুই থেকে আড়াই লাখের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, আড়াই থেকে সাড়ে তিন লাখের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার লাখের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ এবং সাড়ে চার লাখ টাকার উপরে হলে ৩০ শতাংশ বেতন কাটার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১৫ জুলাই, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: